চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মাঝরাতে অস্ত্রধারী ডাকাতদের হানার ভয়ে এখন নিজ উদ্যোগেই পাহারায় নেমেছেন অনেকেই।
১৮ নভেম্বর খৈয়াছড়া ইউনিয়নের মাছুমের তালুক গ্রামে সাবেক সেনা সার্জেন্ট আবু সুফিয়ানের বাড়িতে ঘটে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা। গভীর রাতে দরজা ভেঙে ঢুকে অস্ত্রের মুখে তাকে বেঁধে ফেলে ডাকাতরা। পরে বাড়ির নারী ও শিশুদের জিম্মি করে মারধর করে স্বর্ণালংকার, টাকা ও মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
শুধু এই বাড়ি নয়—গত চার মাসে মিরসরাই উপজেলার হিঙ্গুলী, খৈয়াছড়া, মিরসরাই পৌরসভা ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের কমপক্ষে নয়টি বাড়িতে একই কায়দায় ডাকাতি হয়েছে। এর বেশির ভাগই প্রবাসীদের বাড়ি। এসব ঘটনায় প্রায় ৪২ ভরি স্বর্ণ, তিন লাখ টাকা এবং ২২টি মোবাইল ফোন লুট হওয়ার অভিযোগ রয়েছে ভুক্তভোগীদের।
ডাকাতির পুনরাবৃত্তির পর হিঙ্গুলী ইউনিয়নের আজমনগর গ্রামে শুরু হয়েছে স্বেচ্ছায় পাহারা ব্যবস্থা। সাত ভাগে ভাগ করা এলাকায় প্রতিদিন রাতে প্রায় ১৫০ জন তরুণ লাঠি হাতে টহল দেন। মাঝে মাঝে পুলিশের সদস্যরাও তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন।
এ উদ্যোগের সংগঠক স্থানীয় ব্যবসায়ী সাজ্জাদুল হক বলেন, আগস্ট ও অক্টোবর মাসে চারটি বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। তাই সবাই মিলে পাহারা শুরু করেছি। এরপর থেকে আর কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পুলিশের তথ্যমতে, গত চার মাসে মিরসরাই ও জোরারগঞ্জ থানায় নয়টি ডাকাতির ঘটনায় ছয়টি মামলা হয়েছে। জোরারগঞ্জ থানায় চারটি মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও মিরসরাই থানায় করা মামলায় এখনো কোনো গ্রেপ্তার নেই।
জোরারগঞ্জ থানার ওসি আবদুল হালিম বলেন, ডাকাতরা শহর থেকে এসে দ্রুত সরে পড়ে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে। চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই আগের তুলনায় কমেছে। রাতে টহল জোরদার করা হয়েছে।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, ‘এলাকায় চুরি–ডাকাতি নিয়ন্ত্রণে গত এক মাসে ১০৩ জন দুষ্কৃতকারীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত আন্তজেলা ডাকাত দলের একটি চক্র এলাকায় সক্রিয় রয়েছে। জেলা ডিবি ও র্যাবের সহায়তা নিয়ে তাদের গ্রেপ্তারে মাঠে কাজ করছি আমরা।